General Circulation

‘বিএসএকে’র সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

no comments

বিএসএকে’র সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী এবং কোরিয়ার মিনিস্ট্রি অফ এডুকেশনের অধিনস্থ “ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন (NIIED)” কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একমাত্র সংগঠন ”বাংলাদেশী স্টুডেন্টস’ এসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (বিএসএকে)”। কোরিয়ার ব্যস্ততম জীবন, প্রতিযোগিতামূলক পড়াশোনা এবং গবেষণা যেখানে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলে, সেখানে সকল বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের এক ছাতার নিচে এনে দল, মত, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সবার বিপদে-আপদে পাশে থাকা, পারষ্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন, যোগাযোগ স্থাপন, সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশীয় ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে প্রিয় মাতৃভূমির লাল-সবুজ পতাকার সুনাম ও মর্যাদাকে অক্ষুণ্ণ রাখার লক্ষ্যে কিছু উদ্দ্যমী শিক্ষার্থী ২০১১ সালের ১৩ মার্চ “বাংলাদেশী স্টুডেন্টস’এসোসিয়েশন ইন কোরিয়া(বিএসএকে)” প্রতিষ্ঠা করে। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এবং অলাভজনক এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি মূলত চালিত হয় একটি ব্যতিক্রমধর্মী কাঠামো বিশিষ্ট প্রশাসনিক বা কার্যনির্বাহী পরিষদের মাধ্যমে যাদেরকে একত্রে ইটি-আরটি (এক্সিকিউটিভ ও রিপ্রেজেন্টেটিভ) টিম বলা হয়। সংগঠনটির একটি অন্যতম সৌন্দর্য হচ্ছে, অন্যান্য সংগঠনগুলোর ন্যায় ‘বিএসএকে’র প্রশাসনিক পরিষদে প্রেসিডেন্ট কিংবা সেক্রেটারি নামক কোন পদ নেই। ফলে এখানে কার্যপরিচালনায় ক্ষমতার অতিরিক্ত/অপব্যবহার কিংবা কারো দ্বারা আদিষ্ট হওয়ারও অবকাশ নেই।

বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন

বিএসএকে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফেসবুক এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এছাড়া প্রতিবছর দুইটি সেমিস্টার শেষে দুইবার- গ্রীষ্মকালীন এবং শীতকালীন মিলনমেলার আয়োজন করা হয় যেখানে কোরিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, গবেষক এবং অন্যান্য পেশাজীবীরা সপরিবারে অংশগ্রহণ করে থাকেন। এই মিলনমেলায় বিএসএকে ঐ সেমিস্টারে কোরিয়াতে আগত নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য নবীনবরণ, ডিগ্রিপ্রাপ্তদের সংবর্ধনা, দেশীয় খাবার, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় আয়োজন করে থাকে। মিলনমেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের একে অপরের সাথে পরিচিত হওয়া, সবাই মিলে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও দেশীয় খাবার উপভোগের মাধ্যমে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক অন্যরকম সেতুবন্ধন তৈরি হয়।

 ২০১১ সালে এর প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই বিএসএকে কোরিয়াতে শিক্ষা ও গবেষণায় নিয়োজিত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে উচ্চশিক্ষার্থে যারা কোরিয়াতে আসতে ইচ্ছুক তাদের সবার সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কাজ করে আসছে। ফেসবুকের একটি গ্রুপের মাধ্যমে কোরিয়াতে অবস্থানরত সকল শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের সাথে বিএসএকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখে, যে কোন সুবিধা-অসুবিধায় সবাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়।

উচ্চশিক্ষা গ্রহণে কোরিয়া

প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য কোরিয়াতে পাড়ি জমায়। সময়ের পরিক্রমায় শিক্ষার্থী আসার এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফলেউচ্চশিক্ষা, স্কলারশিপ, ভর্তি প্রক্রিয়া, ভিসা প্রসেসিংসহ সকল ধরনের তথ্য ও পরামর্শ শিক্ষার্থীরা যাতে বিনামূল্যে খুব সহজেইপেতে পারেন, সে লক্ষ্য নিয়েই বিএসএকে সম্প্রতি “Study in Korea: BSAK Wing” নামের এই ফেসবুক গ্রুপ চালু করেছে। এই গ্রুপের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়াতে উচ্চশিক্ষা এবং এতদসংশ্লিষ্ট সমস্ত প্রক্রিয়ার আদ্যোপান্ত সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বিএসএকের কয়েকজন নিবেদিতপ্রাণ স্বেচ্ছাসেবক এবং কোরিয়াতে অধ্যয়নরত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা সকল জিজ্ঞাসার উত্তর দেবার চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, বিএসএকে এটাও বিশ্বাস করে যে, এর প্রশাসনিক পরিষদের সদস্যরা ছাড়াও কোরিয়ায় অবস্থানরত সকল বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ও গবেষকগণ উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয়নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার মনোভাব পোষণ করেন। যার ফলে একদিকে যেমন কোরিয়াতে পড়তে আসতে ইচ্ছুকবাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ ও কোরিয়াতে সংবদ্ধভাবে কর্মপরিচালনারত বিভিন্ন ভূঁইফোড় এজেন্সির প্রতারণা এবং আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া থেকে বাঁচতে পারে, ঠিক তেমনিপ্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা পেয়ে নিজ থেকেই সমস্ত প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করে কোরিয়াতে পড়াশোনা করতে আসতে পারে। বিএসএকে-র হাজারো অলাভজনক কাজের মধ্যে উচ্চশিক্ষার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় আসতে ইচ্ছুক সমস্ত শিক্ষার্থীদের নানাবিধ প্রশ্নের নির্ভুল উত্তরদানের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করার কাজটি যুক্ত করতে পেরে বিএসএকে অত্যন্ত আনন্দিত।

# বিএসএকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহঃ

# বিএসএকের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা বিদেশী সংগঠনঃ

# বিএসএকে যেসকল সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িতঃ

১. কোরিয়ান প্রেক্ষাপটঃ

  • ২০১৯ সালের ৫ই এপ্রিল কোরিয়ার সকচো সিটিতে দাবানলের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো।
  • কোরিয়াতে কোন শিক্ষার্থী যেকোন ধরনের বিপদে পড়লে (এক্সিডেন্ট, নতুন স্টুডেন্টদের বাসা খুঁজে দেয়া, ল্যাব/একাডেমিক লাইফ নিয়ে সমস্যা) সাহায্য-সহযোগিতা করা।
  • কোরিয়াতে কোন শিক্ষার্থী কারো দ্বারা শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থার স্বীকার হয়ে যদি বিএসএকের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করে বা সহযোগিতা চায়, সেক্ষেত্রে বিএসএকের তার পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি প্রয়োজনবোধে আইনি সহায়তা পেতে সহযোগিতা করে থাকে।
  • বাংলাদেশে ছুটি কাটাতে গিয়ে কোভিড-১৯ এর কারণে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের কোরিয়াতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এ্যাম্বাসির সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করা।

২. বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটঃ

  • বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ।
  • শীতার্তদের মধ্যে গরম কাপড় বিতরণ।
  • ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধস এবং চলমান কোভিড-১৯ এর মতো বৈশ্বিক মহামারীতেও বিএসএকে বাংলাদেশীদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

# ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ

– কোভিড-১৯ এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আরও বেশী সংখ্যক বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষার জন্য কোরিয়াতে নিয়ে আসার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন।

“United we stand, divided we fall” এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে বিএসএকে সার্বক্ষণিকভাবে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সবার সহযোগিতা এবং মূল্যবান পরামর্শে বিএসএকের এই অগ্রযাত্রা আরও সুদূরপ্রসারী হোক, সেই প্রত্যাশায়-

ওয়েবসাইটঃ https://bsak.org/

মোঃ গোলাম রাব্বানী                   

গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট, সেন্টার ফর গ্লোবাল ডাইয়াসপোরা স্টাডিজ,
পিএইচডি ক্যান্ডিডেট, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন,
চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,
গোয়াংজু, দক্ষিণ কোরিয়া।                                                                  

Email: rabbani.cnu@gmail.com                                             

মোহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিন ভূঁইয়া
গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট , গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট  সেন্টার ফর গ্লোবাল ডাইয়াসপোরা স্টাডিজ,
এনভায়রনমেন্টাল জিনোমিকস ল্যাব পিএইচডি ক্যান্ডিডেট,
ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব পাবলিক হেলথ,
সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,   সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া।                  

Email: miub.e95@gmail.com